Headlines
Loading...
২০২৪ বাংলাদেশ হিন্দু নিধন, ইসকন কে আতঙ্কবাদী তকমা।

২০২৪ বাংলাদেশ হিন্দু নিধন, ইসকন কে আতঙ্কবাদী তকমা।

2024 Hindu Genocide.
বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলনসমূহ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত ছাত্রসমাজের অবদান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনও ছাত্রদের সক্রিয় অংশগ্রহণের উদাহরণ।

২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলন এবং হিন্দু নিধন 

সম্প্রতি, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে কোটা বাতিলের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘটে। জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে প্রায় ২০০ জনেরও বেশি ছাত্র ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হন, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তাল করে তোলে। যার ফলে বাংলাদেশের জাতীয় জন জীবনে আমূল বিরোধ শুরু হয়। হাসিনা দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেয়।

প্রধানমন্ত্রীর পলায়নের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এমনকি সুন্নিদের মাজার ভেঙে ফেলে। এতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন।

ভারতে এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ও অন্যান্য সংগঠন দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করে। তাদের দাবি ছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

এই ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা আরও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, যিনি চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত, বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে একজন সুপরিচিত ধর্মীয় নেতা এবং ইসকন (আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ) সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসকন চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কারণ, ইসকন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। 

গ্রেপ্তার ও অভিযোগ:

২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সেদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়, যা ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা একটি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত। ওই মামলায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। যদিও সেটি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছিলো না। ইসকন চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সাথ ছেড়ে দিলেও রামকৃষ্ণ মিশন চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পাশে আছে বলে ইদানিং খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ:

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় এলাকায় বিক্ষুব্ধ সনাতনীরা মিছিল ও সমাবেশ করে তার মুক্তির দাবি জানান। এসময় তারা "হর হর মহাদেব", "চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চাই" ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

আইনি প্রক্রিয়া ও জামিন:

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি বিলম্বিত হওয়ায় তিনি এখনও হেফাজতে রয়েছেন। আইনি প্রতিনিধিত্বের অনুপস্থিতির কারণে তার জামিনের শুনানি স্থগিত করা হয়। পরবর্তী জামিন শুনানি ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে। 

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের ঘটনায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশি সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো মানুষ তার মুক্তি ও বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার দাবিতে মিছিল করে। তবে, বিক্ষোভের সময় কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় "গভীরভাবে দুঃখজনক" বলে উল্লেখ করে এবং কূটনৈতিক সম্পত্তির সম্মান রক্ষার ওপর জোর দেয়। 

বুদ্ধিজীবীদের মতামত:

বিখ্যাত বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।" তিনি আরও বলেন, "চিন্ময় প্রভুর মুক্তি পেলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।" 

ইসকনের অবস্থান:

ইসকন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে, তার গ্রেপ্তারের পর ইসকন তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, "ইসকন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যা গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মীয় আদর্শ ও সনাতনী মূল্যবোধকে ধারণ করে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় চর্চা এবং মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।" 

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে। চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান জানানো হলেও, আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং পরবর্তী শুনানি ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলনসমূহ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, এসব আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকিস্বরূপ। এক্ষেত্রে সরকার ও সমাজের সকল স্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কি পরিণতি হবে?

যেকোনো প্রগতিশীল দেশ নিজের দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি, এবং অগ্রগতি চায়। বাংলাদেশের উগ্রপন্থী জি*হাদী কার্যক্রম বাংলাদেশকে আরো একশ বছর পেছনে নিয়ে যাবে। যে অসভ্য বর্বর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার, বাংলাদেশ শাসন করছে। সেই অসভ্য বর্বর শক্তি একদিন বর্তমান সরকারকে পতন করবে।

ভারতকে পরমাণু বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, পশ্চিমবাংলা কে বাংলাদেশে বিলয় করার হুমকি, মাওলানা মৌলবীদের বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার ও  অপমানজনক জনসমাবেশ। বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার সেদিকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। যার ফলে, ভারত সহ পার্শ্ববর্দতী দেশগুলোর সাথে, বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে।

ইতিমধ্যেই, বহু বিদেশি কোম্পানিগুলো, বাংলাদেশের থেকে নিজেদের রপ্তানি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে, শেয়ার মার্কেটে ধস নেমেছে। জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। 

এই দুর্বল পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধ হতে পারে। যে ইসলামিক শাসনব্যবস্থার স্বপ্ন সেখানকার নেতারা দেখছে। সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হতে বেশি সময় লাগবে না। কারণ। মায়ানমারে বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্তে আরাকান সেনা ঘাটি গড়ে তুলছে।

H. R. Sarkar is a dedicated blogger and entrepreneur with expertise in creating digital products and Blogger templates. Managing websites like TechaDigi.com and Hinduhum.net, they bring creativity and technical proficiency to their projects. Through their YouTube channel, Lost Eternal Science, H. R. Sarkar explores the fusion of Hindu spirituality and science, offering unique insights to their audience. With a passion for innovation, they strive to inspire and educate through their work.

0 Comments: