
বাজেট ২০২৪: হিন্দুহুম নেটওয়ার্ক ওয়েবসাইটের দর্শক ও গ্রাহকদের জন্য বিশ্লেষণ
গত মঙ্গলবার (২৩শে জুলাই), অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন লোকসভায় বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি (বাজেট ২০২৪-২৫) উপস্থাপন করেন। এই বছরের বাজেটে নতুন আয়কর ব্যবস্থা গ্রহণকারী করদাতাদের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন কর ব্যবস্থায় কর স্ল্যাবগুলি সংশোধিত হয়েছে এবং স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন সীমা ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলি ৪ কোটি চাকরিজীবী এবং পেনশনভোগীদের জন্য সুবিধাজনক হবে।
ET (Economies Time) অনলাইন জরিপে ৯,৫০০ জন গ্রাহকের মধ্যে ৫৪ শতাংশের বেশি সরকারকে নতুন আয়কর ব্যবস্থায় স্থানান্তর করার দাবি জানিয়েছেন, পাশাপাশি ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য কর ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছেন।
ব্যক্তিগত আয়কর ব্যবস্থায় অর্থমন্ত্রী দুটি প্রধান ঘোষণা করেছেন। প্রথমত, চাকরিজীবীদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, পেনশনভোগীদের জন্য ফ্যামিলি পেনশন ডিডাকশন ১৫,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নতুন কর ব্যবস্থায় সংশোধিত কর কাঠামোটি নিম্নরূপ:
- ০-৩ লাখ টাকা আয় – শূন্য কর
- ৩ – ৭ লাখ টাকা আয় – ৫% কর
- ৭-১০ লাখ টাকা আয় – ১০% কর
- ১০–১২ লাখ টাকা আয় – ১৫% কর
- ১২-১৫ লাখ টাকা আয় – ২০% কর
- ১৫ লাখ টাকার উপরে আয় – ৩০% কর
নতুন কর ব্যবস্থায় একজন চাকরিজীবী করদাতা প্রায় ১৭,৫০০ টাকা পর্যন্ত আয়করে সঞ্চয় করতে পারেন। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এই পরিবর্তনগুলি করার ফলে ৩৭,০০০ কোটি টাকা—২৯,০০০ কোটি টাকা প্রত্যক্ষ কর এবং ৮,০০০ কোটি টাকা পরোক্ষ কর—হারানো হবে। যদিও ৩০,০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ করা হবে, বার্ষিক মোট রাজস্ব ক্ষতি প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা হবে।
অর্থমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেছেন যে আয়কর আইন পর্যালোচনা করে সহজতর করা হবে। এছাড়াও, TDS ডিফল্টের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিউর (SoP) এবং অপরাধগুলির সরলীকরণ এবং যুক্তিসঙ্গততা করার পরিকল্পনা রয়েছে। দাতব্য ট্রাস্টের কর ছাড়ের দুটি ব্যবস্থাও একত্রিত করে একটি করা হবে।
অর্থমন্ত্রীর এই বাজেটে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২৩ অর্থবছরে সরলীকৃত কর ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ৫৮% কোম্পানি কর আসবে বলে জানা গেছে। এদিকে, ক্রেডিট, ই-কমার্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, MSME সেবা সরবরাহ এবং নগর প্রশাসনের জন্য ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (DPI) অ্যাপ্লিকেশনগুলি উন্নত করা হবে।
বাজেট ২০২৪ জনগণের চাহিদা এবং সরকারের আর্থিক লক্ষ্যগুলির মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। নতুন কর ব্যবস্থা করদাতাদের জন্য একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী বিকল্প প্রদান করবে, যা আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং কর রাজস্বের সুষম বিতরণ নিশ্চিত করবে। DPI অ্যাপ্লিকেশনগুলির উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং নাগরিকদের জন্য সেবা সহজতর হবে। এই বাজেটের মাধ্যমে সরকার জনগণের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নে সহায়ক হবে।
0 Comments: