Headlines
Loading...
মুঘল ও ইংরেজ আক্রমণের সময় এই দেবতা বা ঈশ্বর কোথায় ছিলো?

মুঘল ও ইংরেজ আক্রমণের সময় এই দেবতা বা ঈশ্বর কোথায় ছিলো?

একজন ইউটিউবার নিজের YT হ্যান্ডেল থেকে হিন্দুদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছেন,"মুঘল ও ইংরেজ আক্রমণের সময় এই দেবতা বা ঈশ্বর কোথায় ছিলো? রাক্ষস, অসুরদের সঙ্গে দেবতারা যুদ্ধ করেছে। তখন এরা কেন রক্ষা করতে এলো না ?" আজকের ব্লগ সেই বিষয়ে।


দেবতা বা অসুর কনসেপ্টটা সেইরকম নয়, যেভাবে প্রায়শ ভাবা হয়। দেবতা বা ঈশ্বর বা ভগবান এরা আমাদেরই বিভিন্ন সত্ত্বা। বেদ পুরাণ বিভিন্ন শাস্ত্রে এদের আমাদেরই চেতনার বিভিন্ন স্তর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যোগ শাস্ত্রে এই দেবতাদের আমাদের দেহেই চক্রের মধ্যে রয়েছে বলে জানান হয়েছে। এই শরীর ঈশ্বরের মন্দির। তাই দেহ সাধনের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রতি হয়। এমনটা মনে করা হয়।

সত্য যুগের ভগবান ও দেবতা 

সত্য যুগে সৃষ্টির আদিতে ভগবান ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর যুদ্ধের কথা আমরা বিভিন্ন পুরাণ কথন থেকে জানতে পারি। সূর্য পুত্র শনি এবং বিভিন্ন দেবতাদের যুদ্ধ হয়েছে, এমন ঘটনার উল্লেখ আছে। অমৃত ও মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র নিয়ে দেবতা এবং অসুরদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে, এরকম গল্প কথার উল্লেখ আছে।  সেখানে মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে তেমন কোনো কথা নেই। মর্ত্য লোকে তখন ঋষিদের বসবাস ছিলো। দুর্বাসা ঋষির অভিশাপে কত দেবতার যে পতন হয়েছে, বলে শেষ করা যাবে না। ভৃগু ঋষি তো ভগবান শ্রী বিষ্ণুর বক্ষে লাথি পর্যন্ত মেরেছিল।  মানুষের সঙ্গে দেবতাদের সম্পর্ক শুধু লেনদেনের। মনে পরে অহল্যার কথা?

সত্য, সনাতন, সনক এবং সনন্দন, এই চার ঋষিরা বিষ্ণুলোকে বিষ্ণুর দ্বারপাল দের দ্বারা অপমানিত হয়ে তাদের অভিশাপ দেন। সেই দ্বারপল জয় ও বিজয় সত্য যুগে হিরন্যাক্শ এবং হিরন্যকশ্যপ, দ্বাপর যুগে রাবণ এবং কুম্ভ কর্ন, ত্রেতা যুগে শিশুপাল এবং কংশ রূপে জন্ম হয়। অর্থাৎ অসুর গুলোও ওই একই পক্ষের লোক। এরই নাম লীলা বা নাটক।

রামায়ণে ভগবান ও দেবতা

রামায়ণে সেই ভগবান নারায়ণ হরি বিষ্ণু শ্রীরাম অবতার হয়ে এসেছিলেন। যেহেতু শ্রী হরি বিষ্ণু জগত পালক, জগত পিতা ও সঞ্চালক। তাই তিনি নিজে অবতরণ হন। অথবা তাঁর বিভিন্ন অংশ অবতারদের তিনি রক্ষাকর্তা রূপে প্রেরণ করেন। সীতা মাতাকে রাবণ হরণ করে নিয়ে যায়। তাই, সেই যুদ্ধ ছিলো শ্রী রামের। তিনি দেবতাদের সাহায্য পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু দেবতারাও মুক বধির হয়ে চুপ ছিলেন। কারণ এই সবই ভগবানের লীলা।

মহাভারতে ভগবান ও দেবতা

ভগবান শ্রী কৃষ্ণ অর্জুনকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সাহায্য করেছিলেন, কিন্তু ভগবান উপস্থিত থেকেও যুদ্ধ করেননি। স্বর্গের দেবতারা আর্জুন সহ অন্যান্য বিপক্ষ রাজাদের নিজ নিজ অবস্থান বজায় রেখে উভয় পক্ষকে দিব্য অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিলেন, কিন্তু কোনো দেবতা আকাশ থেকে নেমে এসে যুদ্ধ করেছে এমন ঘটনা শোনা যায়নি। 

শ্রী কৃষ্ণ নিজের মামা কংশ এবং মাসীর ছেলে শিশুপালকে সনত কুমারদের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। তখন কিন্তু দেবতারা ওই শিশুপাল এবং রাজা কংশর অত্যাচার থেকে সাধারণ মানুষের উদ্ধারের জন্য স্বর্গ থেকে নেমে আসেনি। তারা সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন।

বলা হয়, দেবতারা সব সময় অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। এটাও ভুল। কারণ ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এবং স্বর্গের রাজা ইন্দ্র যুদ্ধ কল্প বৃক্ষ নিয়ে পরস্পর যুদ্ধ করেছিলেন। এমন ঘটনাও ঘটেছে। 

তাই আজ ভগবান কেন বাঁচাতে আসছে না। মুঘল আমলে কেন ছিলো না, ইংরেজ আমলে কেন আসেনি। এই সবই ভিত্তিহীন কথা। মুঘল আমলে শিবাজী, মোহরানা প্রতাপ, রানী লক্ষীবাই, এদের মতো বীর বীরাঙ্গনারা জন্ম নিয়েছেন। 

ভগত সিং, ক্ষুদিরাম, এদের মতো বীরেরা নিজের জীবন দিয়ে দেশের জন্য লড়াই করেছেন। এরা কি দেবতা নন? আপনিই বা বাদ যাবেন কেন। আপনিও সেই জিগতের অংশ, যে জগত ইশ্বরের সৃষ্টি, যে সকল গুণ দেবতার মধ্যে আছে। আপনার মধ্যেও আছে।

ঈশ্বর তো শুধু হিন্দুদের বা মুসলমানদের নন। তিনি সকলের ঈশ্বর। আমি নিজের জায়গা থেকে কি মনে করছি, বা একজন মৌলবী নিজের জায়গা থেকে কি মনে করছেন সেটা ইশ্বরের বিষয় নয়। যখন একজন হিন্দু অধর্ম করবে, সেও নরক ভোগ করবে। খ্রীষ্টান বা ইহূদী যে কেউ হোক না কেন। ন্যায় কর্তা সঠিক ন্যায় করবে।

Himadri Roy Sarkar always had a passion for writing. When he was younger, he would often write stories and share them with his friends. He loved the way that writing could bring people together and share ideas. In 2022, he founded The Hindu Network,The site quickly became popular, and Himadri was able to share his writing with people all over the world. The Hindu Network is now one of the most popular websites in the world, and Himadri is a well-known author and speaker. blogger external-link facebook instagram

0 Comments: