আমার ধর্ম আমাকে সত্যের পথে চলতে বলে। তাই অকপটে সত্য বলা এবং ভ্রান্তি দূর করা আমার কর্তব্য। এই আর্টিকেল সত্য মিথ্যা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং সকলের গোচর অগোচরে থাকা কিছু কিছু ধর্ম ধ্বজাধারী ভন্ডবাবা, ফাদার, পাদ্রী এবং আলেম হুজুরদের নিয়ে আলোচনা। একপক্ষ যখন হিন্দু সাধু , বাবাজি, সন্ন্যাসীদের ভণ্ডামি নোংরামি নিয়ে কথা বলে, তখন তাঁকে অন্যের পক্ষ গুলোও উল্লেখ করা উচিত। আর যারা নিজের ধর্মকে উঁচু করে অপরের ধর্মকে ছোটো করার চেষ্টা করে, তখন তাকে নিজের পক্ষও জেনে আসা উচিত। কেউ দুধ ধোয়া তুলসি পাতা নয়।
ভন্ড বাবা এবং যৌনাচারী হুজুর এবং পাদ্রী।
গুরমিত রাম রহিম সিং, আসারাম বাপু, স্বামী ভীমানন্দ, স্বামী নিত্যানন্দ এরকম কিছু কিছু হিন্দু বাবা তথা নিজেকে ভগবানের সঙ্গে তুলনা করা কিছু হিন্দু ধর্মগুরু নামধারী আজ জেলের ঘানি টানছেন বা পলাতক হয়ে নিজের পিঠ বাচাচ্ছেন। এদের ভক্তরা কিছুতেই তাঁদের ভন্ডামী মানতে নারাজ। কারণ ভক্তের দৃষ্টিতে এই কথিত ধর্মগুরুরা নির্দোষ। তাঁদের ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।
রাম রহিমের মতো কিছু কিছু যৌনাচারি মুসলীম হুজুর, ওলেমারা ক্যামেরা বন্দি হয়েছে, যাদের নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এতে করে শুধু হিন্দুরা নিজেদের ধর্মগুরুদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে তাই নয়। অনেক হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে বিধর্মী বা নাস্তিক হয়ে গেছে। তাই একটা নিরপেক্ষ ভাবে এই সকল ভন্ড গুরু এবং যৌনাচারী হুজুর এবং পাদ্রীর কথা এই ব্লগে উল্লেখ করবো।
গুরমিত রাম রহিম সিং
2008 সালের সেপ্টেম্বরে, ডেরা সাচ্চা সৌদা এর নেতা গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ওপর তাঁরই একজন সদস্য দ্বারা ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই গুরমিত রাম রহিম হিন্দু-শিখ ধর্মে পবিত্র চাদরের পেছনে নিজের কালো বাজার পরিচালনা করতো। ভক্তদের টাকায় Messenger of God নামক চটকদার চলচ্চিত্র নির্মাণ করে এই ভন্ড গুরু নিজেকে আধুনিক সময়ের নবী, অবতার ঈশ্বরের সন্তান হিসেবে প্রচার করতেন।
সাধারণ মানুষ এই সব ভন্ডামী দেখেও চুপ দেখেছে। কিন্তু কেউ এর বিরুদ্ধে কথা বলেনি। এর প্রতিবাদ করেনি। এরপর একদিন ২০০৮ সালে রাম রহিম সিংয়ের এক শিষ্যা এবং শিষ্য তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানী ও টাকা হেরফেরের মলা করে। সেই আসামি আজ জেলের ঘানি টানছে।
আসারাম বাপু
আশারাম বাপুর ওপর তাঁর শিষ্যর যৌনতা হানির মামলা করা হয়। যেখানে শুধু ওই আরোপীর Word of mouth বা মৌখিক বয়ানের ওপর ভিত্তি করেই তাঁকে আজীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তিনি আর কোনোদিন সৎ সংঘ বা প্রচার করতে পারবেন না।
জানলে অবাক হবেন, 70 বছরের সেই বৃদ্ধ একলা নিজের কুটিরে একজন বালিকা আটকে রেখে 1 ঘণ্টা ধরে শ্লীলতাহানী করে। আরো আশ্চর্য বিষয় হলো ওই বালিকার মা মাত্র আট ফিট দূরে, ওই কুটিরের বাইরেই অপেক্ষা করছিলেন। বালিকার বয়ান দুইবার বদলেছে। প্রথমে সে বলেছে আশারাম বাপু তাকে শারীরিক ভাবে উত্যক্ত করে ছিলো। পরে বালিকা বয়ান দেয় আশারাম বাপু তাকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেছে। এরপর বলা হয় যে তাকে ঘুমের ঔষধ দিয়ে তার শ্লীলতা হানি করা হয়েছে। তাই আশারামের ভক্তরা একে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে।
স্বামী নিত্যানন্দ
স্বামী নিত্যানন্দ যিনি নিজেকে শিবকল্প বলে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে যুক্তসংঘ কৈলাশের অধিপতি বলে থাকেন। তার সংস্থা তাকে শিব ভঙ্গিমায় প্রচার করেন। নিত্যানন্দ যিনি নিজেকে ইশ্বর ঘোষণা করে দিয়েছেন। তার একটি অশ্লীল MMS নেট মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। এর পর থেকেই শুরু হয় তার ওপর আরোপের বাও-ঝাপ। একেরপর এক অশ্লীলতা ও ধর্ষণের ঘটনায় এই স্বামী নিত্যানন্দ জড়িয়ে পড়ে এবং একদিন হঠাৎই তার আশ্রম থেকে পালিয়ে যায়। একজন আমেরিকা মহিলা তার ওপর ধর্ষণের আরো করে। আমেরিকা মহিলা বলে যে পাঁচ বছর ধরে নিত্যানন্দ তার সঙ্গে দুষকর্ম করেছিল।
এরা ছিলো হিন্দু সম্প্রদায়ের, এরপর
যৌনাচারী আলেম:
হুজুর এরশাদুল্লাহ
ইনি হলেন এরশাদুল্লাহ। যিনি নিজের ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে অপকর্ম করতে গিয়ে সাংবাদিকদের হাতে নাতে ধরা পড়েছেন। আসলে ওই ছাত্রীই এরশাদুল্লাহর কুকর্মকে সকলের সামনে ধরিয়ে দিতে এই ফন্দি আঁটে। সাংবাদিকরা যখন তাকে জিজ্ঞেস করে তিনি এমন কাজ কেন করছেন ? তার জবাব, "আমি শয়তানের ধোঁকায় এমন করেছি।" আসলে কোনো মুসলিম তাঁর এই যুক্তি অস্বীকার করবে না। এরপর,
মওলানা মোঃ সোলেমান
একুশে মিডিয়ার একটি প্রতিবেদনে মোঃ সোলেমান নামক এই ব্যক্তি যিনি একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। দ্বিতীয় শ্রেনীর আট বছর বয়সী এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে। এই মাদ্রাসা শিক্ষক ছুটির পর ওই বালিকাকে একটি ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ভিক্টিমের বাবা একজন মুসলিম এবং রিক্সা চালক। বালিকার চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা ওই মাদ্রাসা শিক্ষককে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশের হতে তুলে দেয়। বলা হয়েছে বাঁশখালির পূর্বশীলকুপ আশিঘর পাড়ার ঘটনা।
এরপরের যে দুইজনের নাম বলতে যাচ্ছি। অনেকেই তাকে চেনেন। কারণ এরা দুইজনই সু প্রসিদ্ধ বক্তা।
হেফাজতে ইসলামের জয়েন্ট সেক্রেটারি মামুনুল হক
ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন তিনি হলেন হেফাজতে ইসলামের জয়েন্ট সেক্রেটারি মামুনুল হক। ইনিও একটি স্টিং অপারেশনে অসহজ অবস্থায় একটি রিসর্টে এক পার্লারের কাজ করা মহিলার সঙ্গে ধরা পড়েন। সকলের সামনে ধরা পড়ে তিনি ওই মহিলাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর মামলা হয় এবং দীর্ঘ দুই বছর কারাবাসে থাকার পর জামিন পেয়ে যান।
ধর্ষক পাদ্রী:
কেরালায় একটি ক্যাথলিক খ্রীষ্টান ধর্মযাজককে বিরুদ্ধে ওই চার্চের সন্ন্যাসিনীর যৌণ হেনস্থা ও ধর্ষণের আরোপ করা হয়। বামপন্থী মিডিয়া The Print এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কিশোরী এবং সন্ন্যাসী থেকে শুরু করে একজন পর্যটক যাজকদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আসছে, বিশ্বব্যাপী রোমান ক্যাথলিক চার্চের মতো ভারতীয় পাদ্রীও কলঙ্কিত হয়েছে।
যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারি যা বিশ্বব্যাপী ভারতীয় রোমান ক্যাথলিক চার্চকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে, যেমনটি কেরালার জলন্ধর বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কালের বিরুদ্ধে বারবার ধর্ষণের অভিযোগের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
মাত্র গত বছর, সুপ্রিম কোর্ট কেরালায় ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার উপর শোক প্রকাশ করেছিল , যেখানে ভারতে সর্বাধিক সংখ্যক খ্রিস্টান রয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম রক্ষক ভক্ষক হয়ে গেছে।
মামলাটি প্রকাশ্যে আসার পরে, কেরালা ক্যাথলিক বিশপস কাউন্সিলের ফাদার Paul Thelekat ধর্ষণকে "ভোক্তাবাদ" হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
ভোক্তাবাদ কি? ভোক্তাবাদ হল এই ধারণা যে বাজারে ক্রয়কৃত পণ্য ও পরিষেবার ব্যবহার বাড়ানো সর্বদা একটি কাঙ্খিত লক্ষ্য এবং একজন ব্যক্তির পণ্য ও সেবা মূলত ভোগ্যপণ্য এবং বস্তুগত সম্পদ প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে।
তিনি বলেছিলেন, "যেভাবে মিডিয়াতে মহিলাদেরকে পণ্য হিসাবে উপস্থাপন করা হয়, বিজ্ঞাপনে এবং সমস্ত পণ্য হিসাবে বরাবর মেয়েদের এবং মহিলাদের সাথে বাজারজাত পণ্যের প্রচার করা হয় যেখানে মানবদেহ অমানবিক হয়।"
সারাংশ:
এই এসবই অকপট সত্য, সামাজিক অবক্ষয় দূর করা আমার এই আর্টিকেল সকলের গোচর অগোচরে থাকা কিছু কিছু ধর্ম ধ্বজাধারী ভন্ডবাবা, ফাদার, পাদ্রী এবং আলেম হুজুরদের নিয়ে আলোচনা করেছে। যেখানে কেউই সঠিক পথে পরিচালিত হয়নি।
এই জন্য হিন্দু ধর্ম বারবার জন্মজাত বর্ণ প্রথার কথা বলে এসেছে। দু একটা বই শাস্ত্র কাব্য পড়ে লোকের সামনে বড় বড় লেকচার ধরা যায়। কিন্তু যখন বাবে সে সাপ ধরতে বলবে তখন আধো মুখী হতে হবে।
এই আশারাম বাপু প্রথম জীবনে সাইকেলের দোকানে কাজ করতো, তিনি একজন সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে নিজেকে গুরু বলে প্রচার করেছে। নিত্যানন্দ সাধারণ কৃষকের ছেলে, এরকম রাম-রহিম একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। এই সকল ধর্মগুরুরা পরম্পরাগত শিক্ষা ও সংস্কার দ্বারা আসেনি। তাই, এদের দ্বারা কোনো উপকার হয়নি। তবে এনারা যা কিছুই করেছে। খারাপ দিক গুলো বাদ দিয়ে দেখলে, আমরা এদের থেকেও শিক্ষা নিতে পারি। — হিন্দু হোক বা মুসলিম, খ্রীষ্টান বা ইহূদী, কেউই দুধে ধোয়া তুলসি পাতা নয়।
0 Comments: