হালাল বনাম ঝটকা : পশু নিষ্ঠুরতায় কোনটি এগিয়ে?
Animal Cruelty (অ্যানিমাল ক্রুয়েলটি) বা পশু নিষ্ঠুরতা দণ্ডনীয় অপরাধ। হালাল বলুন বা ঝটকা, উভয়ই এই অ্যানিমাল ক্রুয়েলটি করে। মানুষের খাদ্য তালিকায় পশুর মাংস একটি বিশেষ স্থান দখল করে বলেই এই অপরাধ অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না।
ধর্মীয় আস্থা অনুযায়ী হিন্দুরা মূলত ঝটকা এবং মুসলমানরা হালাল মাংস খায়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অহিংসা থাকা সত্বেও তাঁরা মাংস খায়।
হ্যা, মানুষ সর্বভুক প্রাণী। খাদ্য শৃংখলে তাঁর একটি জায়গা আছে। মানুষ ফলমূল, শাক, সবজি মাছ মাংস ডিম ভয়ই খায়। এই খাওয়ার কারণ হলো রুচি ও রসনা। মশলা ছাড়া শাক সবজি বলুন আর মাছ মাংসই বলুন সবই আরুচিকর। তবু জীবন ধারণের জন্য আমাদের অন্য জীব (উদ্ভিদ ও পশু ) দের কোস্ট দিয়ে তাদের দেহ খেতে হয়।
মানুষ তৃণভোজী পশুদের মতন শাক পাতা খেতে পারবে না। কাঁচা শাঁক পাতার মানুষের পেটে হজম হবে না। তাই রান্না করেই খেতে হয়। ফল, মূল কাঁচাই খাওয়া যায়, কিন্তু মাংসাশী পশুর মত, মানুষ মাংস কাঁচা খেতে পারবে না। সেটাও সিদ্ধ করেই খায়।
মাংসাশী পশুদের মতো মানুষের ক্যানাইন দাঁত আছে , তাই মানুষকে মাংসাশী বলা যায় না। মাংসাশী পশুরা জিভ দিয়ে চেটে চেটে জল খায়। মানুষ জলকে শুষে বা চুমুক দিয়ে খায়।
মাংসাশী প্রাণীদের হাতে পায়ে ধারালো সরু নখ থাকে। আমাদের নখ চ্যাপ্টা। মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য পরিপাক তন্ত্র ছোটো হয়, আমাদের অনেক বড়। তাই আমরা একেবারে মাংসাশী নই। আমরা সাময়িক মাংসাশী (Temporary carnivores.)।
এই মাংস খাওয়া নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা, বাদ বিবাদের অন্ত নাই। পশুর মৃতদেহকে মশলা দিয়ে পুড়িয়ে, ভেজে অথবা সেদ্ধ করে খাওয়া নিয়ে নিজের নিজের মত থাকতে পারে— হালাল খাওয়া ভালো নাকি ঝটকা। এই হালাল বনাম ঝটকা নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনার সূচি নিম্নরূপ।
জীবের প্রকার ভেদ।
উৎপাদক ও খাদক
আমরা নিয়মিত যাহা খাই সেটাই আমাদের শরীর নির্মাণ করে। ফল মূল শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেলস, শর্করা এবং ফাইবার থাকে। মাটি থেকে উদ্ভিদ মিনারেল সংগ্রহ করে। বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের দ্বারা উদ্ভিদ গ্লুকোজ তৈরি করে। এই গ্লুকোজের জটিলতম রূপ কে সেলুলোজ বা ফাইবার বলা হয়। প্রাণীরা নিজের দেহে খাদ্য নিজে উৎপাদন করতে পারেনা। তাই প্রাণীদের উৎপাদক অর্থাৎ উদ্ভিদের ওপর নির্ভর থাকতে হয়। উদ্ভিদরা নিজের শরীরে নিজের খাদ্য উৎপাদন করে। উদ্ভিদ উৎপাদক এবং প্রাণীরা খাদক।
কার্বন নির্ভর জীব ও তাদের সম্পর্ক
উদ্ভিদ সূর্যের রশ্মির উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় যে প্রাণশক্তি অঙ্গারাআত্তীকরণ বা কার্বন অসিমিলেশন করে। সেই অ্যাসেমিলিটেড কার্বনে একটি যৌগ তৈরী হয়, যার নাম আধুনিক বৈজ্ঞানিকেরা দিয়েছেন— এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (ATP)। এর মধ্যে শক্তি সঞ্চিত থাকে। প্রাণীরা যখন গাছের ফল বা শাকসবজি খায়। এই ATP শরীরের কোষে ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে। সেই শক্তি প্রাণীদের জীবিত রাখে। তাই আমাদের, অর্থাৎ উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের কার্বন নির্ভর জীব বলা হয়। এই নির্ভরতার কারণেই কার্বন চেইন বা কার্বন সাইকেল পূর্ণ হয়। ভর ও শক্তির নিত্যতা সূত্র অনুসারে। শক্তির রূপান্তর হয়।
শক্তির সঞ্চার
প্রাণদেরর শরীরে সেই ATP অনুগুলো মাইটোকনডিয়া নামক কোষানুর মধ্যে সঞ্চিত থাকে। মাংসাশী প্রাণী যখন আরেক প্রাণীকে শিকার করে, খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। তারা সেই মাইটোকন্ড্রিয়ার শক্তিকেই খাদ্যের সাথে গ্রহণ করে। এটাই কোষের জ্বালানী হিসেবে কাজ করে। এমনকি ওই প্রাণীর দেহে যে সমস্ত জৈব যৌগ গুলো থাকে, সেটাও গ্রহণ করে।
শরীরকে পরিচালন করার জন্য যে প্রাণ নামক শক্তি আছে তাহাই এই ATP।
বলি প্রথা ও ঝটকা।
হিন্দু ধর্মে দেবতার উদ্দেশ্যে পশুকে বলি দেওয়া হয়। এই বলির উদ্দেশ্য মাংস ভক্ষণ নয় বরং মাংস ভক্ষণের প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তির দিকে নিয়ে যাওয়া। এবং সঙ্গে ওই বলির পশুটি যেন পশু যোনি থেকে মুক্ত হয়ে ঊর্ধ্বলোকে গমন করে, সেই প্রার্থণাও করা হয়। আমোদ - প্রমোদ বা জীবের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পশু বলি হয় না। হিন্দু ধর্ম শাস্ত্র মতে এই বলি সঠিক নয়। কিন্তু যারা তামসিক বা রাজসিক, তাদের রুচি অনুযায়ী, সাধনার মার্গ কে প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তির দিকে চালিত করা।
মূলত কালী এবং কিছু কিছু দুর্গাপূজায় বলি হয়। বৈষ্ণব, শৈব, সৈর্য, সম্প্রদায় বলি হয় না। শুধুমাত্র শাক্ত সম্প্রদায় অর্থাৎ শক্তির উপাসকরা পশু বলি দেয়। পুরোহিত প্রথমে দেবীর পূজা করেন। তারপর বলিকাঠের পূজা করেন। তারপর বলির পশুকে মণ্ডপে আনা হয়। সেই পশুর মঙ্গল কামনা করে, পশুকে এক কোপে মাথা থেকে ধর আলাদা করা হয়। একে ঝটকা বলে। এরপর পশুর রক্ত একটি পাত্রে করে, মাকে নিবেদন করা হয়। পশুর দেহ তার পদতলে রেখে, পশুর পশু জনি থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়। তারপর সেই মৃতদেহকে প্রসাদ রূপে বিতরণ করা হয়।
কুরবানী ও হালাল।
এই কোরবানি বা জবাই মুসলমানদের বলি প্রথা। বকরি ঈদ ও ভিন্ন কোনো উৎসবে মুসলমানরা পশু কোরবানি করেন। এই প্রথা ইব্রাহিমের সময় থেকে শুরু হয়েছে। যখন মুসলমানদের কথিত ঈশ্বর (আল্লাহ) ইব্রাহিমের নিষ্ঠা পরীক্ষা করার জন্য তার সন্তানের বলি চেয়েছিলেন। ইব্রাহিম তার সন্তানকে বলি দেওয়ার জন্য পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং যখন তিনি তার সন্তানের বলি দিচ্ছিলেন। সেই জায়গায় সন্তানের বদলে একটি ভেড়া বলিদান হয়ে যায়। সেই থেকে কোরবানির রীতি মুসলমান সমাজে প্রচলিত আছে।
কোরবানিতে, বিসমিল্লাহ বলে পশুর গলায় ধীরে ধীরে ছুরি চালানো হয়, যাতে ওই পশুটি নিজের মৃত্যু বেদনা প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করতে পারে। তার শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে যায়। শরীরের রক্ত হীনতার ফলে পশুটি হাইপোক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) হয়ে মারা যায়।
হালাল ও বলির পার্থক্য।
বলির সময় পশুর স্পাইনাল কর্ড এর উপর প্রথম আঘাতটা পড়ে। স্পাইনাল কর্ড ও শরীরের সংজ্ঞাবাহী স্নায়ু গুলোর থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পশুটি ব্যাথা বুঝতেও পারেনা। বুঝতে পারলেও খুব কম সময়ের জন্য অনুভব করে। তাই, এটি দেখতে পশু নিষ্ঠুরতা হলেও নিষ্ঠুরতা নয়।
হালালের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে না। গলার ধমনী কাটার ফলে তার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ রক্ত বের হয়। এবং এই সময়ে সে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে স্মরণ করতে করতে মৃত্যু বরন করে।
হালালের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
যুক্তি দেখানো হয় যেহেতু হালাল প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিচ্ছিন্ন হয় না সেহেতু পশুর শরীরে pH ( potential of Hydrogen) লেভেল কমে 5 হয়ে যায়। বিপরীতে ঝটকা তে এটি 7 পর্যন্ত থেকে যায়। বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন দল বারবার তথ্য উপস্থাপন করেছে যাতে দেখানো হয় যে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করার সময়, প্রাণীগুলি প্রচুর যন্ত্রণা ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে। পশুদের ক্ষেত্রে এই সময় অ্যাড্রেনালিন এবং ডোপামিনের মাত্রা 30-50 শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এই কারণে যে বেশিরভাগ হরমোন মূলত সমস্ত রকমের স্ট্রেস হরমোন গুলো মস্তিষ্ক থেকে হাইপোথ্যালামিক নিঃসরণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
অ্যাড্রেনালিন এবং ডোপামিন রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে পশুর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধে না। অর্থাৎ রক্তের মাধ্যমে সব দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়।
বলির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
বলির উদ্দেশ্য পশুর মাংস খাওয়া নয়। বলির উদ্দেশ্য পশুকে পাশ বন্ধন থেকে মুক্তি দেওয়া। যেহেতু বলি প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিচ্ছিন্ন হয়। পশু বলি করার সময়, প্রাণীগুলি যন্ত্রণা ও বেঁচে থাকার জন্য যেহেতু সংগ্রাম করেনা, সেহেতু পশুদের এই সময় অ্যাড্রেনালিন এবং ডোপামিনের মাত্রা স্বাভাবিকই থাকে।
এই কারণে যে সমস্ত হরমোন মূলত স্ট্রেস হরমোন, তাদের মাত্রা স্বাভাবিকই থাকে। পশুর শরীরে pH (potential of Hydrogen) লেভেল কমে 5 হয়ে যায় না। pH কম হওয়াকে অ্যাসিডোসিস বা অম্ল ধর্মিতা বলা হয়। এটি মোটেও ভালো জিনিস নয়। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের রক্ত অ্যালকালাইন বা ক্ষারিও হয়। রক্ত ক্ষারিও হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে ক্ষার জাতীয় খাদ্য বিশেষ উপযোগী। কারণ,
এই সমীকরণটি সাধারণ জল (H2O) ও কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) থেকে কার্বনিক এসিড (HCO3–) এবং হাইড্রোজেন আয়ন (H+) উৎপন্ন হাওয়ার প্রক্রিয়ার একটি সমীকরণ।
হাইড্রোজেন আয়ন বৃদ্ধি পেলে pH কমে যায়। এই পি এস কে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কিডনির ওপর চাপ পড়ে। আমাদের রক্তে এর মাত্রা approximately 7.35 to 7.45 পর্যন্ত। হাইড্রোজেন আয়ন বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে কিডনি কার্বনিক এসিড আয়ন বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেয়। এর ফলে শরীরে অম্ল ও ক্ষারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত থাকে। হালাল প্রক্রিয়ায় পশুর শরীরে pH লেভেল কমে 5 হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে যে সকল উচ্ছেচক এবং হরমোন গুলো নিঃসরণ হয় সেটি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে, খাদ্যের সাথে আমাদের শরীরেও প্রবেশ করে। আমাদের শরীরকে সেই অতিরিক্ত খাদ্য বিষ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করতে হয়।
কার্বন অ্যাসেমিলেশনের মতন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, হরমোন, তথা বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থগুলো নিচু স্তরের খাদক থেকে উঁচুস্তরের খাদক পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। একে বায়োম্যাগনিফিকেশন বলা হয়।
ঝটকার ধার্মিক ব্যাখ্যা:
হিন্দু ধর্ম শাস্ত্র মনুস্মৃতিতে বিনা কারণে পশু মাংস খাওয়া বারণ আছে। অর্থাৎ, মানুষ মাংস খেতে পারে কিন্তু তার জন্য কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। যেমন গ্রাম্য কুকুর, শুয়োর, কাক, শালিক ইত্যাদির মাংস খাওয়া যাবেনা। পশুযাগ বা মন্ত্রপুত বলি সংস্কৃত মাংসই গ্রহণীয়। যোগ্য সকলের মঙ্গল করে। বলির পশু মৃত্যুর পর পশু যোনি থেকে মুক্ত হয়। তাই, বলির উদ্দেশ্য মাংস ভক্ষণ নয়, বলির উদ্দেশ্য হলো পশুর মুক্তি।
কৃত বা ক্রয় করা, অথবা অন্যের দ্বারা আনা মাংস ভক্ষণের পূর্বে দেবতা অথবা পিতৃ পুরুষদের নিমিত্তে দান করে খাওয়া যেতে পারে।
হালাল বনাম ঝটকা — পশু নিষ্ঠুরতায় কোনটি এগিয়ে?
হালাল বনাম ঝটকা : পশু নিষ্ঠুরতায় কোনটি এগিয়ে? — এই প্রশ্ন যখন Artificial Intelligence chatGPT কে করা হোলো। তার জবাব ছিলো।
In the comparison between halal slaughter and stunning, stunning may be considered more humane towards animals. Stunning minimizes suffering by rendering the animal unconscious before slaughter, whereas halal slaughter involves cutting the animal's throat while it is conscious, which can cause distress and pain. Therefore, in terms of animal welfare, stunning is preferable.
"Stunning" এর বাংলা অনুবাদ হলো "ঝটকা"। এর বাংলা তর্জমা হলো —হালাল জবাই এবং ঝটকার মধ্যে তুলনায়, ঝটকার প্রাণীদের প্রতি বেশি মানবিক বিবেচনা করা হয়। ঝটকার সময়ে পশুটিকে অচেতন করে যন্ত্রণা কমিয়ে দেয়, যেখানে হালাল জবাইয়ের মধ্যে পশুর গলা কেটে ফেলা হয়, যখন এটি সচেতন থাকে । যা ওকে কষ্ট এবং ব্যথার দেয়। অতএব, প্রাণী কল্যাণের ক্ষেত্রে, ঝটকাই প্রশস্ত।
পরিশিষ্ট:
সুতরাং এখন আপনার কাছে এখন একটি পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য রয়েছে, এই তথ্যগুলি আপনাকে হালাল না ঝাটকা মাংস প্রাধান্য দেওয়া উচিত তা নিয়ে বিবেচনা করতে সাহায্য করবে। এই নিয়ে বিতর্কের কোনো প্রশ্ন নেই।
বলা হয়ে থাকে, আমি উভয় ধরনের মাংসই খেয়েছি এবং আমি এখনও দুটির মধ্যে পার্থক্য বলতে পারি না। আমি বিশ্বাস করি যে কীভাবে মাংস পরিবেশন করা হয় এবং আরও অনেক কিছুর সাথে এটি রান্নার জন্য কীভাবে প্রস্তুত করা হয় তার সাথে অনেক কিছু জড়িত। শুধু আপনার খাবারটি পুরোপুরি উপভোগ করতে মনে রাখবেন।
0 Comments: