যদি ঈশ্বর জগত সৃষ্টি করেছেন। জগত সৃষ্টির পূর্বে ভিন্ন ভিন্ন পদার্থ কোন অবস্থায় ছিলো?
ভূমিকা
আমরা যাকে জগত বলি সেটি আসলে ঈশ্বর বা ব্রহ্মের ইচ্ছা শক্তি ‘মায়া’। মায়া শব্দটি সংস্কৃত ‘মা’ ও ‘য়া’ দ্বারা গঠিত। সংস্কৃত ভাষায় মূলধাতু ‘মা’ শব্দের অর্থ—‘না বা নেই’, এবং ‘য়া’ শব্দের অর্থ— ‘যাহা’ । অর্থাৎ মায়া কথার অর্থ হলো ‘যাহা নেই’। অর্থাৎ এই আমরা যাকে জগত বলি সেটি নেই। তাহলে এতো কিছু যা আমরা দেখছি সেগুলো কি? এই সবই পঞ্চ-ইন্দ্রীয় এবং পঞ্চভূতের ক্রিয়া বিক্রিয়া।
ব্রহ্মই পঞ্চভূত ও পঞ্চ-ইন্দ্রীয় রূপে প্রকট হয়েছেন। তিনিই নিত্য লিলা করছেন। যেহেতু ব্রহ্মই জগত রূপে প্রকট হয়েছেন, সেহেতু এই জগতকে ইশ্বরের প্রমাণ হিসেবে গন্য করা হয়।
এই জগত সৃষ্টির পূর্বে এই ভিন্ন ভিন্ন পদার্থ, জীব, অনু পরমাণু ব্রহ্মতে এক রূপে, একসাথে, একাকার ছিলো। সৃষ্টির পরে সেই সব কিছু ব্রহ্মতেই আছে এবং সব ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় সেই ব্রহ্মতে লীন হয়ে ব্রহ্ম রূপেই থাকবে। বেদের সেই মন্ত্র যা গীতায় বলা হয়েছে:
ব্রহ্মার্পনং ব্রহ্ম হবির্ব্রহ্মাগ্নৌ ব্রহ্মনা হুতম।ব্রহ্মৈব তেন গন্তব্যং ব্রহ্মকর্ম্মসমাধিনা।(গীতা শ্লোক ৪/২৪)
অর্থাৎ যিনি যজ্ঞ করছেন তিনি ব্রহ্ম। তিনি ব্রহ্ম হবি ব্রহ্ম নিমিত্তে অর্পণ করছেন উভয়ই ব্রহ্ম। সেই অগ্নিও যা হবি গ্রহন করেছেন সেটিও ব্রহ্ম। এমনকি এই যজ্ঞের আহুতি ক্রিয়া সেটাও ব্রহ্ম। যজ্ঞকারী ব্যক্তি ব্রহ্মেই কর্ম্মসমাধির ফলে যে কর্ম্মফল প্রাপ্তি বা গন্তব্যও ব্রহ্ম।
তাই ব্রহ্ম সত্য জগত মিথ্যা বা অনিত্য।
জগৎ মিথ্যা - যুক্তি
মনের তিনটি প্রধান অবস্থা জাগ্রত, নিদ্রা ও সুষুপ্ত। আমরা জাগ্রত অবস্থায় এই জগতকে দেখি, নিদ্রায় স্বপ্ন দেখি। আমরা যেভাবে স্বপ্ন দেখি, সেখানেও একটা জগত তৈরী হয়। সেখানে মানুষ, বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, ঘোড়া, সুখ, দুঃখ, ভয় সব কিছুই থাকে। এমনকি যে স্থান কখনো কল্পনা বা দেখা হয় নাই। সেটাও দেখতে পাই। ঘুম ভাঙ্গলেই সব মিথ্যা।
তেমনি আমরা যে জগতে বাস করি, সেটি ঈশ্বরের স্বপ্নের জগত। আর আমাদের আসল স্বরূপ তিনিই। জ্ঞান হলেই সব মিথ্যা।
ব্রহ্ম সত্য
ব্রহ্ম শব্দটি বৃ ধাতুর সঙ্গে মণ প্রত্যয় যোগে এসেছে। যার অর্থ হলো “সর্ব বৃহৎ”। এই জগত মায়ার অন্তর্গত, মায়া ব্রহ্মের অন্তর্গত। ব্রহ্ম কারো অন্তর্গত নয়। তাই ব্রহ্মকে সর্ব বৃহৎ এবং যেহেতু ব্রহ্মের কোনো উৎস বা বিকল্প নেই তাই তাঁকে সদবস্তু বলা হয়। ব্রহ্ম এক এবং অদ্বিতীয় সত্তা। আদিতে তাঁর মধ্যে কোনো ভেদ ছিলো না। ব্রহ্ম এবং জগত এর মধ্যে ভেদ জ্ঞান উদয় হওয়ার পর পরই এই জগত ও সমগ্র বিশ্ব প্রকৃতির প্রকট রূপে অনুভূত হয়েছে। তাই ব্রহ্ম সত্য জগত মিথ্যা।
ভেদ জ্ঞান
বেদ বলেছে, সৃষ্টির আগে সমস্ত জগত একমাত্র স্বরূপে অবস্থান করছিল। একমেবাদ্বিতীয়ম — এই শ্রুতি বাক্যটি তিন প্রকার ভেদ শূন্য প্রতিপাদক। একম-এব-অদ্বিতীয়ম —এই শ্রুতির অর্থ এইরকম, একম অর্থাৎ স্বগত ভেদ শূন্য, এব অর্থাৎ স্বজাতীয় ভেদ শূন্য এবং অদ্বিতীয়ম অর্থাৎ তিনি বিজাতীয় ভেদ শূন্য। এই ভেদ সমুহ বুদ্ধির দ্বারা প্রতক্ষ করা হয়। কারণ বুদ্ধি দ্বারাই ভিন্ন ভিন্ন স্থিতি, গুণ ও পরিমাণ বিচার করা হয়। ব্রহ্ম স্বগত, স্বজাতীয়, এবং বিজাতীয় ভেদ শূন্য। তাই তিনি অভেদ। আসুন জেনে নিন এই তিন প্রকার ভেদ গুলো কি রকম -
স্বগত ভেদ:
একই বস্তুর মধ্যে পার্থক্য হলো স্বগত ভেদ। যেমন লোহার মূর্তির হাত ও পা। একই বস্তুর অংশ হওয়া সত্বেও হাত ও পা আলাদা আলাদা ভাবে চেনা যায়। ব্রহ্ম অখন্ড তাই তাঁর অংশ বা খন্ড নেই। ব্রহ্মকে খন্ড রূপে বিচার করা হলে সেটি আর ব্রহ্ম থাকে না। আবার ব্রহ্ম হীন বস্তুর অস্তিত্ব নেই।
স্বজাতীয় ভেদ:
এক রকম দুটি বস্তুর মধ্যে ভেদ হলো স্বজাতীয় ভেদ। যেমন, একটি ছাগল আরেকটি ছাগলের মধ্যে যে ভেদ আছে, একজন রাজা এবং একজন চাষা দুই জনই মানুষ কিন্তু নাম ও গুণের ভেদ আছে। এরকম স্বজাতীয় ভেদ ব্রহ্মে নেই। ইহা ব্রহ্ম, উহা ইহা অপেক্ষা একটু কম ব্রহ্ম এইরকম ভেদ নেই।
বিজাতীয় ভেদ:
দুটি আলাদা আলাদা বস্তুর মধ্যে ভেদ হলো বিজাতীয় ভেদ। যেমন: একটি মানুষ ও একটি ছাগলের মধ্যে যে ভেদ আছে। ব্রহ্ম এবং জীবে কোনো ভেদ নেই। ইহা ব্রহ্ম উহা ব্রহ্ম নয়, এই রকম ভেদ ব্রহ্মে করা সম্ভব নয়।
তাই, ব্রহ্ম নিজেকে কারো থেকে বড় বা মহান হিসেবে তুলনা করে না। যা নেই তা বলার কোনো অর্থ হয় না। কারণ, রোগীই নিরোগী হাওয়ার আশা করে। যার রোগ নেই, সে কখনোই নিরোগী হাওয়ার আশা করতে পারে না। ব্রহ্মই সব হয়েছেন, তাই তিনিই কার বিরূদ্ধে যাবেন? তাই, হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র সকল মত পথ ও সমপ্রদায়কে স্বীকার করে। কিছু কিছু ধর্ম মত আছে যারা কেবল নিজের ঈশ্বরকে সত্য এবং অন্যদের ইশ্বরকে মিথ্যা বা কল্পনীক বলে গলবদ্য করে।
ব্রহ্মে সব তর্ক, জ্ঞান, বুদ্ধি, যুক্তি লীন হয়ে যায়। সাধারণ উদাহরণের মাধ্যমে বলতে গেলে, যেভাবে লবন জল সমুদ্রে ফেলে দিলে জল বা লবন বলে আলাদা কিছুই থাকে না। সবটাই সমুদ্র হয়ে যায়। সেই ভাবেই ব্রহ্ম তে সব লীন হয়ে যায়।
এক্ষণে আমরা ব্রহ্ম থেকে কীভাবে জগত এসেছে তাহা আলোচনা করবো।
ব্রহ্মের নাম ও রূপ নেই
ব্রহ্ম —এই শব্দটি ব্যবহার করে আমরা কেবল তাঁর নামকে প্রকট করছি। কিন্তু যাহা সৃষ্টিই হয় নাই, তার নাম কি ভাবে নির্ণয় করা হলো? সৃষ্টির আগে তো শব্দ, বর্ণ, অক্ষর ছিলো না। তাহলে তাঁর নাম কিভাবে হতে পারে? এর জন্যে আমাদের সৃষ্টির ক্রমের চিত্র অঙ্কনার্থ (বা treas) নির্ণয় হবে করতে হবে।
প্রকৃতির পঞ্চ তত্ত্ব
ক্ষিতি, আপ, তেজ, মরুৎ, ব্যম এই পাঁচ তত্ব হলো পঞ্চ ভূত। ব্যাম থেকে মরুত, মরত থেকে তেজ, তেজ থেকে অপ, অপ থেকে ক্ষিতি তৈরী হয়েছে।
ব্যাম তত্ত্ব
ব্যম তত্ত্ব হলো আকাশ বা অবকাশ। এর মধ্যেই দিয়েই রেডিও তরঙ্গ, চুম্বক ক্ষেত্র কাজ করে। এই তত্ত্ব চোখে দেখা যায় না স্পর্শ করা যায় না, এর ঘনত্ব নেই। তবে এই তত্ত্ব শব্দ তন্মাত্র বহন করে। এর নিযুক্ত ইন্দ্রিয় কর্ন।
মরুৎ তত্ত্ব
শব্দ আকাশ এর মধ্যে দিয়ে পরিবাহিত হয়। কিন্তু এটি সম্ভব হয় মরুৎ তত্ত্বের কারণে। এই তত্ত্ব চোখে দেখা যায় না স্পর্শ করা যায়, এর মধ্যে ঘনত্ব আছে। এই তত্ত্ব শব্দ ও স্পর্শ তন্মাত্র বহন করে। এর নিযুক্ত ইন্দ্রিয় ত্বক।
তেজ তত্ত্ব
তেজ বা দ্বারা বায়ু তত্ত্বে ঘনত্ব তারতম্য হয়। মরুভমিতে মরীচিকা এর প্রমাণ। তাই তেজ তত্ত্বের দ্বারা রূপ প্রকটক হয়। এই তত্ত্ব চোখে দেখা যায়, স্পর্শ করা যায়,। এই তত্ত্ব রূপ তন্মাত্র বহন করে। এর নিযুক্ত ইন্দ্রিয় চোখ।
আপ তত্ত্ব
এই তত্ত্বে শব্দ, স্পর্শ, রূপ তন্মত্র তো আছেই , সঙ্গে রস তন্মাত্র থাকায় এর ঘনত্ব উক্ত ব্যম, মরুৎ, তেজ থেকে বেশি তাই এই তত্ত্ব চোখে দেখা যায়, এর শব্দ কানে শোনা যায়, একে স্পর্শ করা যায়, এবং এর ঘনত্ব গ্রহণের জন্য জিহ্বা নামক ইন্দ্রিয় নিযুক্ত করা হয়েছে।
ক্ষিতি তত্ত্ব
এর মধ্যে শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রসের সঙ্গে গন্ধ তন্মাত্রা যুক্ত হয়ে আরো বেশী ঘনত্ব যুক্ত হয়ে পিন্ড গঠন করে। এর নিযুক্ত ইন্দ্রিয় নাসিকা। গ্রহ, নক্ষত্র, পিন্ড গুলো ক্ষিতি তত্ত্বের রূপ।
অব্যক্ত থেকে ব্যক্ত জগত এই ভাবে এসেছে এবং এর প্রমাণ প্রত্যক্ষ করা যায়। তাই হিন্দু ধর্ম কোনো অদৃশ্য, কাল্পনিক ঈশ্বর নয় বরং সৃষ্টির মূল উৎসকে আরাধনা করে। এই ভাবে আমরা সেই সত্য ইশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারি। ইশ্বর অন্ধ শ্রদ্ধা নয় বরং সত্য বিশ্বাসের বিষয়। কোনো ধর্মই এভাবে জগত উৎপত্তি ব্যখ্যা করে না।
ব্রহ্মের শক্তিই মায়া
মায়ার পৃথক সত্তা বা অস্তিত্ব নাই। ব্রহ্মের শক্তিই মায়া। জগতের প্রত্যেক রূপ ও নাম দেখেই মায়ার অনুমান করা যায়। এই মায়া অনির্বচনীয় (indescribable)। কারণ মায়ার পৃথক অস্তিত্ব নেই। যেমন অগ্নির দাহিকা শক্তি আছে। দাহিকা শক্তিকে অগ্নী বলা যায় না। কারণ, কার্য না হাওয়া পর্যন্ত শক্তিকে জানা যায় না। তাই কার্য-ই শক্তির প্রমাণ। সেই ভাবে মায়া ব্রহ্মের শক্তি। আমরা সেই শক্তির অন্তর্গত, তাই জগত কে দেখেই ব্রহ্মের প্রমাণ পাওয়া যায়। শুধু ধারণা স্পষ্ট করতে বলা যায়, মায়া ও জগত একই মুদ্রার দুই পিঠ।
আলোচিত বিষয় অনুসারে, সদবস্তু বা ব্রহ্ম এক এবং অদ্বিতীয় বলে বিবেচিত হয়। এটি ছাড়া দ্বিতীয় বাস্তব অস্তিত্বকে প্রত্যাখ্যান কোরে, জোর দেয় যে সদবস্তুই একমাত্র বাস্তব। তবে তাঁর এই নাম বা রূপ মায়ার দ্বারা প্রকট করা সম্ভব হয়েছে। বলেই আমরা আজ তাঁকে নিয়ে চর্চা করতে পারছি। ব্রহ্মকে জানা যায়। জিনি ব্রহ্মকে জেনে যান, তিনি ব্রহ্ম সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না। তাই তিনি ‘অবিজ্ঞেও’। কারণ ব্রহ্ম মায়ার অন্তর্গত নয়। ব্রহ্মই ব্রহ্মকে জানতে পারে। তাই যিনি জানেন তিনি সর্বদা ব্রহ্মতে স্থির থাকেন। ব্রহ্মকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলে আসলে মায়াকেই ব্যখ্যা করা হয়।
মায়ার স্বরুপ
তাহলে এই আলোচনা থেকে আমরা তিনটি জিনিস পেলাম: প্রথম ব্রহ্ম মায়া নয়, দ্বিতীয় ব্রহ্ম মায়া থেকে পৃথকও নয় এবং তৃতীয় মায়া ব্রহ্মের অংশও নয়।
হিন্দু দর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে মায়াকে প্রায়ই মহাজাগতিক বিভ্রম বা আড়াল শক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যা চূড়ান্ত বাস্তবতাকে (বা ব্রহ্মকে) আমাদের বোধ বা জ্ঞানকে আড়াল করে। এই দর্শন কেন্দ্র করেই হলিউড মুভি The Matrix নির্মীত হয়েছিল।
পাশ বন্ধন
এই মায়া অর্থাৎ যাহা নেই সেটাই সত্য বলে মনে হয়। কিন্তু বিবেক দিয়ে বিচার করলে এই মায়ার আসল স্বরূপ ধরা পড়ে। কোন বস্তুই সদা সর্বদা থাকেনা। আজ যা আছে কাল তা থাকবে না। দশক হোক শতক হোক বা সহস্র বছরে সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। যাকে আপন মনে হয়, সেই স্বার্থ রক্ষায় পর হয়ে যায়। মৃত্যুর সময় কেউ সঙ্গে যায় না, আর যার মৃত্যু হয় তাঁকে ডাকলেও সারা দেয় না। যার এই উপলদ্ধি নেই সে মানুষ হয়েও পশুর মত জীবন নির্বাহ করে।
ত্রি দেব ও তৎ শক্তি
মায়া হোলো সৃজনশীল এবং রূপান্তরকারী শক্তি যার মাধ্যমে ব্রহ্মা মহাবিশ্বকে প্রকাশ করে। বিষ্ণু সঞ্চালন করে এবং মহাকাল লয় করেন। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ তিন জন ভিন্ন ভিন্ন নয়। তাদের শক্তি সরস্বতী, লক্ষ্মী, কালি মায়া।
জীবনমুক্তি
মায়াকে ব্রহ্মের সত্তা থেকে আলাদা সত্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তবে এটি ব্রহ্মের সৃজন শক্তির একটি অবিচ্ছেদ্য দিক। এটি বিশ্বে পরিলক্ষিত বৈচিত্র্য এবং বহুত্বের জন্য দায়ী। অনেক আধ্যাত্মিক সাধকের লক্ষ্য হল মায়ার বন্ধন অতিক্রম করা এবং ব্রহ্মের সঙ্গে একত্বকে উপলব্ধি করা। যিনি এটি উপলব্ধি করেন, তিনি জীবনমুক্ত।
যিনি ব্রহ্মকে জেনে ব্রহ্ম বিচার করে যা কিছুই করেন না কেন। তিনি কর্ম করেও অকর্তা থাকেন। তিনি কোনো কিছু প্রাপ্ত হয়ে হর্ষত হন না। কোনো কিছু হারিয়ে দুঃখ পান না। সুখে দুঃখে সম ভাব। মৃত্যুর পর এরকম মানুষই মুক্তি লাভ করেন। কচু পাতার জলের মতো কোনো কর্ম ধর্ম তাঁকে স্পর্শ করে না।
অন্তিম বিচার:
এক্ষণে আমরা যা কিছু আলোচনা করলাম তার থেকে আমরা এটাই জানলাম যে, ঈশ্বর জগত সৃষ্টি করেননি তিনি জগত হয়েছেন। জগত হাওয়ার পরেও তিনি জগত থেকে আলাদা ভাবে দষ্টা হিসেবে আছেন। প্রকৃত অর্থে তিনিই দাতা, তিনিই গ্রহীতা, তিনিই দান এবং তিনিই সব। তিনি এক, ভেদশূন্য ও অভিন্ন হওয়ায় অবিজ্ঞেয়। তাঁকে পূজা, প্রার্থনা, ধ্যান, জপ, মন্ত্র, তন্ত্র, উপবাস দ্বারা জানা যায় না। এই সব গুলোই তাঁকে পাওয়ার সহায়ক মাত্র। এই সবের মধ্য দিয়ে মন উন্নত হলে জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন হয়। অন্তিম তাঁর সঙ্গে যোগ যুক্ত হয়ে তাঁর স্বরূপ প্রাপ্ত হয়।তাই ইশ্বর কখনই অন্য
0 Comments: