![হিন্দু বিবাহ একটি যজ্ঞ](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhDU_kwHzODBVG-cNVH2iBk8Jct0Rs8LK_BzBiFH81Cww6DBmDY8xtc_A2NwBGIuhk98_vddfRDoFdCa4oZdHBue1bQoYjvAM8wPR4nMUzh_v8FH7kB1duTPqh0V-TxEvYIOqWYKeacUJjYU9NDsasNO_e0xvhE2jSRdTjUzDZ-1PvURa6udNxqKhrIbWVD/w700/hindu-marriage.png)
'বিবাহ' ১৬ সংস্কারের মধ্যে একটি সংস্কার। এর দ্বারা স্বামী স্ত্রী সংসার রূপী ব্রত, গৃহস্থ রূপী আশ্রমে প্রবিষ্ট করে। হিন্দু ধর্মে ‘বিবাহ’ কেবল নারী পূরুষের মিলন নহে। বিবাহ দুই পরিবারে মিলনও বটে। কন্যার পিতা ইশ্বরকে সাক্ষী রেখে সংক্লপ করে এবং জামাতার হস্তে নিজ কন্যাকে সম্প্রদান করে। জামাতা ইশ্বরকে সাক্ষী রেখে বধূ রূপে সম্প্রদান গ্রহন করে। কন্যা সম্প্রদান — একটি বিশাল পূণ্য কর্ম। পিতা মাতার ঋণ শোধ হয় না কিন্তু কন্যা সম্প্রদান ঋণ শোধ হয়। কারণ পুত্র ও কন্যা দ্বারা পিতা মাতাই পুনঃ জন্ম গ্রহন করে। আজ আমরা হিন্দু ধর্মের বিবাহ সম্পর্কে জানবো।
হিন্দু বিবাহে কেবমাত্র স্বামি স্ত্রীর ও পুরোহিতের স্বীকৃতি যথেষ্ট নয়। হিন্দু বিবাহে পিতা মাতা, শশুর শাশুড়ী, আত্মীয় স্বজনের অংশ গ্রহণ ও স্বীকৃতি দরকার। অন্যান্য ধর্ম মত গুলোতে শুধু পুরোহিত এবং বর বধূর স্বীকৃতি দরকার হয়। অন্যান্য ধর্ম মত গুলোতে বিবাহ বর বধূর চুক্তি মাত্র। কিন্তু হিন্দু বিবাহে পরিবার, সহিত সমাজ ও 33কোটি দেবী দেবতার আশির্বাদ নেওয়া হয়। বৈদিক মতে বা হিন্দু ধর্ম অনুসারে বিবাহ কোনো চুক্তি বা Agreement নয়, বিবাহ একটি যজ্ঞ। সন্তান উৎপাদন করা বা স্ত্রী বা পূরুষের দেহ সুখ ভোগ করা বিবাহের উদ্দেশ্য নয়।
$ads={1}
শাস্ত্র বলছে, "যেভাবে জীব প্রাণ বায়ুতে শ্বাস প্রশ্বাসের আশ্রয় জীবিত থাকে,
সকল সংসার এই গৃহস্থের আশ্রয় দ্বারা জীবিত থাকে।" তাই বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ন
সংস্কার। বিশ্বের ভরন পোষনের দায় স্বীকার করা, তথা সমাজের ও নিজের আধ্যাত্মিক
উৎকর্ষ সাধন করা। $ads={2}
বিবাহের প্রকার
শাস্ত্র মতে বিবাহ আট প্রকার। মনুসংহিতায়- আট প্রকার বিবাহের উল্লেখ আছে ।
- ব্রহ্ম
- দৈব
- আর্য,
- প্রজাপত্য
- অসুর
- গন্ধর্ব
- রাক্ষস এবং
- পৈশাচ
এই আট প্রকারের মধ্যে বর্তমানে প্রজাপত্য বিবাহ সমাজে বহুল পরিচিত ও প্রচলিত। এই প্রজাপত্য বিবাহ অনুযায়ী পিতা তাঁর কন্যাকে বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদান করে এবং অলংকার দ্বারা সজ্জিত করে বিদ্যান ও সদাচারী বরকে স্বয়ং আমন্ত্রণ করে কন্যা সম্প্রদান করে।
স্বীকৃত বিবাহ
নিমক্ত চার প্রকার বিবাহকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এই বৈধ বিবাহ করলে সমাজে নিন্দিত হতে হয় না। এগুলো স্বীকৃত বিবাহ।
- ব্রহ্ম
- দৈব
- আর্য,
- প্রজাপত্য
অস্বীকৃত বিবাহ
নিমক্ত চার প্রকার বিবাহকে বৈধতা দেওয়া হয়নি। এই অবৈধ ভাবে বিবাহ করলে সমাজে নিন্দিত হতে হয়। কারণ সমাজ, বর ও বধূর পারস্পরিক সহমতি ছাড়াই এই বিবাহ করা হয়। এগুলো সমাজ কর্তৃক অস্বীকৃত বিবাহ।
- অসুর
- গন্ধর্ব
- রাক্ষস এবং
- পৈশাচ
বিবাহের প্রক্রিয়া:
বর ও কনে পক্ষের বাড়ির বড়রা পরস্পর আলোচনা করে জ্যোতিষীর দ্বারা বিবাহের শুভদিন ও ক্ষণ নির্ধারণ করে। বিয়ের আগে অধিবাস পালিত হয়। অধিবাসের দিন পাত্র ও পাত্রীকে উপবাস করতে হয়। এই দিন বাড়ীর বড় মহিলারা পূজো পাঠ করে, ওই দিন সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। অধিবাসের দিন পাত্র ও পাত্রী উভয়ের বাড়িতে সত্য নারায়ণ পূজা হয়।
পরের দিন বিবাহ মন্ডপে বিবাহ সম্পন্ন হয়। কন্যার পিতা অগ্নি সাক্ষী রেখে নিজের কন্যার দায় ভার পিতার হাতে তুলে দেয়। পাত্র সেই দায়ভার গ্রহন করে। এরপর কন্যা ও বর পাত্র দেবতা, গুরুজন, ব্রাহ্মণ ও সকলকে সাক্ষী রেখে সাতটি সপথ গ্রহন করে। এভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
সময়ে বহুল বোধে সংক্ষেপে বলা হলো। পরবর্তিতে আরেকটি আর্টিকেল প্রকাশ করা হবে।
0 Comments: