Headlines
Loading...

হিন্দু সমাজে জাত ও বর্ণ প্রথার বহু প্রাচীণ ইতিহাস আছে। এই জাত ও বর্ণ কি বস্তু সেটি না জেনেই অনেকে এ বিষয়ে ভ্রান্ত ধারণা পোষন করে থাকে। “বর্ণপ্রথা” বা “বর্ণ ব্যাবস্থা” শব্দটি ভুল। সঠিক শব্দটি হোলো — বর্ণ ও আশ্রম ধর্ম। বর্ণ কোনো প্রথা নয়। এটি ধর্ম। এই ধর্মই হিন্দু ধর্মের মূল। এই বর্ণ ও আশ্রম ধর্ম ব্যাক্তি বিশেষের গুণ ও কর্ম দ্বারা বিভাজিত হয়ে প্রাচীন কালে ভারতের বৈদিক সংস্কৃতির সমাজ থেকে মেনে আসা হচ্ছে। আজ এই ধর্মে ধারণা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কারণ আমরাই এর গুরুত্বকে ছোটো করেছি। বর্ণ ও ধর্ম নিয়ে নিম্নের বিষয় গুলো আজ আলোচনা করবো। 


ভ্রান্ত শব্দ প্রয়োগ করে ভ্রান্ত প্রচার করা হয়েছে, সেই থেকে ভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এই ভ্রান্ত ধারণা পোষন করতে করতে আমরা এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছে গেছি যেখানে নিজের ধর্মকে গালি দিতে দ্বিধা করি না।

আর যারা এর প্রচার করছে ভেদাভেদ সরানোর জন্য আবার তারাই সেই কাজটাই করে, যার বিরুদ্ধে তারা বিরোধ করতে নেমেছে। অর্থাৎ কাদা পরিষ্কার করার জন্য তারাই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছে। এক জাতের বিরূদ্ধে আরেক জাতকে উস্কে অথবা এক বর্ণের বিরুদ্ধে আরেক বর্ণকে লেলিয়ে দিয়ে। তারা ভাবছে, এই ভাবেই উচু জাত গুলোকে জব্দ করা হচ্ছে। এই ভাবে নিয়ে কাজ করলে কখনো কি ভেদাভেদ নষ্ট করা সম্ভব?


জাত শব্দটি এসেছে জ্ঞাত শব্দ থেকে এবং বর্ণ শব্দটি শাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছে গুণ ও কর্মের দ্বারা গঠিত সমাজের বিভিন্ন স্তরকে বোঝাতে। আর্য এবং অনার্য, সভ্য এবং অসভ্য, পশু এবং মানুব, দানব এবং দেবতা, এই হলো জাত। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র এই হলো চাতু:বর্ণ। ব্রহ্মচর্য, গৃহস্থ, বানপ্রস্ত ও সন্ন্যাস এই চারটি হোলো আশ্রম। 

আর্য ও অনার্য 

সদাচার, শিষ্ঠাচার, জ্ঞান, বিনয়, বীরত্ব এসকল আর্য জাতির লক্ষণ ও পরিচয়। কদাচার, অসভ্যতা, অজ্ঞান, উগ্রতা, ভীরুতা বা কর্ম বিমুখতা এবং অধর্ম এসকল অনার্য জাতির লক্ষণ। মহাভারতে বিভিন্ন স্থানে আর্য কথার উল্লেখ করা হয়েছে। স্ত্রী তাঁর স্বামীকে, মন্ত্রী তাঁর রাজাকে, সেই রাজাকে আবার কোনো ঋষি বা মহাপুরুষদের "হে আর্য " বলে সম্বোধন করতে দেখা গেছে। অর্থাৎ, আর্য ও অনার্য নিয়ে ব্রাহ্মণ ও চন্ডাল চামার  জাতিদের প্রতি বিভেদ মূলক জাতিবাদের যে ঘৃন্য মতবাদ প্রচার করা হয়েছে, সেটি নিন্দনীয়। 

চার বর্ণ ও ম্লেচ্ছ 

হিন্দু ধর্মে চার বর্ণের কথা বলা হয়েছে, যথা: ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র। এই চার বর্ণের অতিরিক্ত যা কিছু আছে তাঁদের ম্লেচ্ছ বলা হয়। সদাচার বিহীন বর্বর লোকেদের মলেচ্ছ বলা হতো। শক, হুন, যবন, এরা ম্লেচ্ছ জাতির অন্তর্গত। এই ম্লেচ্ছরাদের মধ্যেও যদি সদাচার, শিষ্ঠাচার, জ্ঞান, বিনয়, বীরত্ব এসকল লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে তারাও আর্য বলে গণ্য হবে। "ব্রাহ্মণ এবং ক্ষত্রিয় উচু জাত, বৈশ্য এবং শূদ্র ছোটো জাত” —এভাবে শাস্ত্র কখনো বলেনি। কেউ বড় বা ছোটো নয়। শাস্ত্র সবাইকে ওই বিরাট পুরুষের দেহ বলে আখ্যায়িত করেছে। ব্রাহ্মন মুখ, ক্ষত্রিয় হাত, বৈশ্য  পেট এবং শূদ্র চরণ। 

ব্রাহ্মণ

ব্রাহ্মণ দান, ভিক্ষা, শিক্ষা ও সেবার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। যদিও সে সকল বিশ্বের স্বামী তবুও সে ভিক্ষা করেই আয় করতে পারবে। অন্য কোনো উপায়ে ব্রাহ্মণদের আয় করা বা সম্পত্তি বর্ধন করার পথ নেই। সে যদি দ্বিজ 'বেদ ত্যাগ করে' অন্য বিষয়ে শ্রম করে, অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ অর্জনের জন্য চেষ্টা করে। সে নিজের পরিবার সহিত শূদ্র বলে গণ্য হয়।

ক্ষত্রিয় 

সৈনিক, সামরিক ও রাজা হোলো ক্ষত্রিয়। রাজার সম্পত্তি আছে। রাজা পিতার মতো তার প্রজাদের পালন ও শাসন করে। সে তাঁর রাজকোষ এবং অর্থ দ্বারা প্রজাদের সেবার জন্য বৈশ্য সঞ্চিত ধনের ওপর নির্ভর করে। একজন প্রকৃত রাজা কখনোই নিজের প্রজাকে কষ্ট বা শোষন করবে না । রাজার সৈন্য এবং সামরিক বাহিনী দেশের ভিতর ও বাইরের বিদ্রহের নিয়ন্ত্রণ করে। রক্ষক কখনো ভক্ষক হতে পারে না। 

বৈশ্য 

পেট যেমন সমগ্র দেহে পুষ্টি বর্ধন করে, পেটে যেমন খাদ্য সঞ্চয় হয়, বৈশ্য সেরকমই রাজ্য বা দেশের জন্য ধন সঞ্চয় ও বৃদ্ধি করে। কৃষক, পশু পালক, ব্যাবসায়ী, বিনিয়োগ পতি, স্বর্নকার, কামার, ছুতোর এরা বৈশ্য। এঁদের দ্বারাই দেশের বিশে বিশে অর্থাৎ জনে জনে অন্ন বস্ত্র ও বাসস্থান সম্ভব হয়। বিশে বিশে সেবা করার জন্য সে বৈশ্য।

শূদ্র

আগেই বলেছি দ্বিজ বেদকর্মত্যাগ করে' অন্য বিষয়ে শ্রম করে, তবে সে নিজের পরিবার সহিত শূদ্র বলে গণ্য হবে শূদ্র হলো বেতন বা ভাতা ধারী কর্মী। নাপিত, বেতন কর্মচারী, সেবক। এই শূদ্রকেচরণ বলা হয়েছে। কারন, নাপিত, বেতন কর্মচারী, সেবক ছাড়া কোনো সমাজ উন্নতি করতে পারে না।

† সুদ্র:  যে ব্যক্তি নীচ, নিকম্মা, সর্ব ভক্ষি(কুকুর, ইদুর ভক্ষণ করে এমন), অশৌচ (দীর্ঘ দিন ধরে স্নান করে না), মূর্খ মানুষ সূদ্র বলে কথিত।  সদাচার ও শিষ্ঠাচার ত্যাগ করলে ব্রাহ্মনও সুদ্র হয়। শূদ্র আর সুদ্র এক কথা নয়। 
 চন্ডাল: যে ব্যক্তি নীচ এবং উগ্র স্বভাবের হয়, সে ব্রাহ্মণ হলেও চন্ডাল বলে কথিত।  আবার, জাতিগত ভাবেও চন্ডাল জাতির উল্লেখ পাওয়া যায়। alert-info

মিশ্র বর্ণ: 

কাম জনিত কারণে দুই ভিন্ন বর্ণে নারী ও পুরুষের মিলনে যে সন্তান জন্ম হয়। সেই সন্তান মিশ্র বর্ণ। এই মিশ্র বর্ণ গুলো থেকে বিভিন্ন জাত উৎপন্ন হয়। জাত গুলো ভিন্ন ভিন্ন এবং নির্দিষ্ট পেশায় নিয়োজিত করা হয়েছে।

আশ্রম

শ্রম কথার অর্থ হলো 'কর্ম করা'। শৈশবকাল, বাল্যকাল, যৌবনকাল, ও বার্ধক্য এই চার পর্যায়ে কখন কেমন শ্রম বা কর্ম করতে হবে তাহা শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। শৈশবকাল থেকে বাল্য কাল পিতা মাতার সঙ্গে কেটে যায়। তারপর উপনয়ন সংস্কার হলে বাবা মায়ের ঘর ছেড়ে গুরু গৃহ বা আশ্রমে প্রবেশ করে ব্রহ্মচর্য অবলম্বনপূর্বক শিক্ষা অর্জন করতে হতো, এই সময় গুরুর আচরণ অনুকরণ করে গুরুর শেখানো পথ অনুসরণ করতো। এরপর বারো বা অধিক বছর ব্রহ্মচর্য পুষ্ট হলে। শিখা ছেদন করে গৃহস্থ আশ্রমে প্রবেশ করতে হতো। অর্থাৎ স্ত্রী, পুত্র, পিতা-মাতার সঙ্গে পরিবার নিয়ে বাস করতে হতো। অনুরুপে সন্তান-সন্ততিগণ ব্রহ্মচর্য শেষ করে গৃহস্থ আশ্রম গ্রহণ করলে পুনরায় গুরু গৃহে অথবা বনে তপস্যার মাধ্যমে জীবনের অন্তিম সময় গুলো ঈশ্বর প্রাপ্তির জন্য ব্যয় করতো। ইহা কে বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস বলা হয়। এই চার প্রকার আশ্রম অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য, গৃহস্থ, বানপ্রস্ত ও সন্ন্যাস এই চারটি হোলো চতু:আশ্রম।$ads={1}

বেদ শিক্ষা শূদ্রের অধিকারে নেই 

শিক্ষা অর্জন করা সকলের অধিকার। কিন্তু জ্ঞান কখনই অধিকারের পর্যায়ে আসে না। কারণ একই শিক্ষা পেয়ে সবার একই জ্ঞান হয় না। জ্ঞান সম্পূর্ণ একান্ত বিষয়। এটা মানুষের অন্তরে প্রকাশ পায়। বেদ শিক্ষা শূদ্রের অধিকারে নেই এমনটি মোটেও সত্য নয়। শূদ্রও বেদের অন্তর্গত। শূদ্র বেদের উপভাগ বা পাকযজ্ঞ কে গ্রহন করবে। পাকযজ্ঞ করতে ব্রাহ্মণ পুরোহিত দরকার হয় না বরং শূদ্রই পৌরহিত্য করে। এই পকযজ্ঞ তিনটি ভাগে বিভক্ত: ১) হুত, ২) আহুত এবং ৪) প্রহুত। অন্ন প্রাসন, উপনয়ন, বিবাহ, অন্তেষ্ঠি, শ্রাদ্ধ শান্তি সব কিছুইতেই এই শূদ্রের উপস্থিতি এবং অনুষ্ঠান প্রয়জন। বৈদিক কর্মে শূদ্রের উপনয়ন সংস্কার নেই। তাই বেদকে সরাসরি গ্রহন করে না। শূদ্র তন্ত্র মার্গে যেতে পারে।

শূদ্র ব্রাহ্মণের আচরণ করতে পারবে না

শাস্ত্র বলছে, "শূদ্র ব্রাহ্মণের আচরণ করতে পারবে না"। শূদ্রকে ব্রাহ্মণের আচরণ পালন (যেমন: পৌরোহিত্য, বেদ শিক্ষা, গুরু গিরি ইত্যাদি) করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। কারণ, ব্রাহ্মণের সব কিছু জুড়ে আছে নিয়ম ও নিষ্ঠার গন্ডিতে। একজন শূদ্রর সেই অধিকার নেই।  এটি কোনো বৈষম্য নয়। এটি বিধান। যে ভাবে বিদ্যা মন্দিরের ক্ষুদে বালককে যদি উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত, বিজ্ঞান, দর্শন পড়ানো হয় তবে সে কিছুই অনুধাবন করতে পারবে না (ব্যতিক্রম আলাদা ব্যাপার)। সে ভাবেই শূদ্রর স্থুল আচরণ না জেনে ব্রাহ্মণের সুক্ষ্ম ব্রাহ্মণের আচরণ গ্রহন করলেও তাহা যথাযথ পালন করতে পারবে না। যদি করে তবে সেটা ঢং ছাড়া  আর কিছু হ্যবে না।$ads={2}

ব্রাহ্মণ যে পরিবেশে বেড়ে উঠেছে, সে যে সকল নিষ্ঠা, শিক্ষা, আচার অনুষ্ঠান করে অভ্যস্থ। একজন শূদ্রের ক্ষেত্রে সেটা সহজ হবে না। শূদ্র জপ, ধ্যান, পাঠ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন না। তার গুণ অনুসারে সে জপ, ধ্যান, পাঠ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে না। 

আবার উল্টো দিকে ব্রাহ্মণের পক্ষেও শূদ্রের মতো জীবন নির্বাহ করা কষ্টকর। 

ব্রাহ্মণ ঘরে জন্ম গ্রহন করলেই ব্রাহ্মণ হওয়া যায়

শাস্ত্র তো এটাই বলেছে যে জন্মগত ভাবে সবাই শূদ্র হয়ে জন্মায়। সংস্কার দ্বারা দ্বিতীয় জন্ম হয়। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এই তিন বর্ণে উপনয়ন সংস্কার করা হয়। শূদ্রের উপনয়ন সংস্কার নেই। তাই, তাদের বেদ অধ্যয়ন বা অধ্যাপনা থেকে বিরত করা হয়েছে। তাই যে যেই বর্ণের সে সেই বর্ণের অন্তর্গত। বর্ণ জন্মগত। কর্মের দ্বারাও বর্ণ পরিবর্তন হয়। নীচ কর্ম করে পতন হয়। 

মূর্খ মনে করে ব্রাহ্মণ ঘরে জন্ম গ্রহন করলেই ব্রাহ্মণ হওয়া যায়। কিন্তু তারা এটা ভূলে যায়। জন্মই যথেষ্ট নয়। নিজের ব্রাহ্মণত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে কিছু কিছু Terms and conditions মেনে চলতে হবে। যোগ্য সূত্র অর্থাৎ পৈতে ধারণ করে যদি কোনো বিপ্র বেদ অধ্যায়ন না করে অন্য বিষয়ে পরিশ্রম করে তবে ওই বিপ্র ব্রাহ্মণত্ব চ্যুত হয়ে পরিবার সহিত শূদ্র বলে গন্য হয়।  অভিবাদনের প্রত্যাঅভিবাদন না করলেও ব্রাহ্মণত্ব চ্যুত হয়ে শূদ্রত্ব প্রাপ্ত হয়। আবার শূদ্র কন্যা যদি ব্রাহ্মণ পূরুষের সঙ্গে বিবাহ করে কণ্য সন্তান জন্ম দেয়। এভাবে সপ্তম প্রজন্মের পর ওই শূদ্র কন্যার কন্যার সপ্তম প্রজন্মের সন্তান বা সন্ততি শূদ্রত্ব মুক্ত হয়ে ব্রাহ্মণ হয়ে যায়। এভাবেই ব্রাহ্মণ শূদ্র হয় এবং শূদ্র ব্রাহ্মণ হয়।

তাহলে আমরা দেখলাম, বর্ণ জন্মগত। আবার দেখালাম এটি পরিবর্তন করাও সম্ভব। তাই, বর্ণ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। মানুষ নিজ নিজ স্বার্থ অনুযায়ী একে ব্যবহার করে এসেছে। বর্ণ ভেদ নিয়ে আজকে আমাদের মধ্যে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেটা বেশির ভাগই অপপ্রচারের কারণে। রামায়নের জাবাল ঋষি থেকে শুরু করে মহাভারতের মৎস্যগন্ধা সবেতেই বর্ণ পরিবর্তন দেখা গেছে। ঋষি জাবাল বেশ্যা পুত্র হাওয়া সত্বেও বেদ জ্ঞান অর্জন করেছেন। মৎস্যগন্ধা মেছনী হাওয়া সত্বেও রাজ পরিবরের গৃহবধূ রাজমাতার আসন পেয়েছে। আবার কেউ যদি বলে এদের পূর্ব পুরুষ ব্রাহ্মন বা ক্ষত্রিয় ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। তবে মনুস্মৃতি বলেছে যে — শূদ্রদের জন্ম বশিষ্ঠ ঋষির গোত্র থেকে। যাহাই হোক, আমরা সবাই ইশ্বরের অংশ। এটাই যথেষ্ট জ্ঞান। যে যে কর্মেই নিযুক্ত থাকি না কেন, আমরা সমজরূপি ইশ্বরের সেবাই করেছি। তাই, "স্বধর্ম নিধনং শ্রেয় পরধর্ম ভয়াবহ।"

স্বধর্ম পালন করা উচিত:

শূদ্র ব্রাহ্মণের আচরণ করতে পারবেনা, অনুরূপভাবে ব্রাহ্মণও শূদ্রের আচরণ করতে পারবেন না। তাই বর্ণ অনুযায়ীই স্বধর্ম পালন করা উচিত। উত্তম রূপে অনুষ্ঠিত অন্যের ধর্ম আচরন করার চেয়ে নিজ ধর্ম আচরন উত্তম। কারণ বিধর্ম পালনের ফল ভয়াবহ। 

একজন ব্যবসায়ী যদি ধর্মগুরু হয় তবে সে ধর্মকে ব্যাবসার মতো প্রচার করবে। একজন রাজ্নেতা যদি ধর্মগুরু হয় তবে সে ধর্মকে রাজনীতির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করবে। তাহলে ধর্ম কি নিজের আসল স্বরুপ বজায় রাখতে পারবে? অধর্ম আর ধর্ম নিয়ে মানুষ অবশ্যই বিভ্রান্ত হবেন। ধর্ম ছেড়ে দিন যে কোনো ক্ষেত্রেই এটিই সত্য। আজকাল ডাক্তার রোগীর সেবা করে না। তারা রোগের ব্যাবসা করে। হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসার আগে টাকা জমা করতে হয়। এগুলো কি ধর্মের গ্লানি নয়?

শূদ্র পৌরহিত্য করে 

বেদ মতে শূদ্র পৌরহিত্য করে না। কিন্তু তন্ত্র শাস্ত্র মতে শূদ্র তান্ত্রিক মার্গে পৌরহিত্য করার উপযোগী। যেহেতু শূদ্রকে পৌরহিত্য করার অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেই জন্যে তন্ত্রকে অনেক ভাবে ভুল ব্যাখ্যা করে কুলষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তন্ত্র মার্গে বেদ থেকেই তন্ত্রের আগমণ। 

H. R. Sarkar is a dedicated blogger and entrepreneur with expertise in creating digital products and Blogger templates. Managing websites like TechaDigi.com and Hinduhum.net, they bring creativity and technical proficiency to their projects. Through their YouTube channel, Lost Eternal Science, H. R. Sarkar explores the fusion of Hindu spirituality and science, offering unique insights to their audience. With a passion for innovation, they strive to inspire and educate through their work.

0 Comments: