
‘ভগ’ মানে যোনী, তবে ভগবান শব্দের অর্থ কি?
শাস্ত্র মতে "ঐশ্বর্য্য, বীর্য, যশঃ, শ্রী, জ্ঞান, ও বৈরাগ্য-এই ছয় গুণ যার মধ্যে আছে, তিনিই ভগবান্।" এই ঐশ্বর্য্য, বীর্য, যশঃ, শ্রী, জ্ঞান, ও বৈরাগ্য-এই ছয় গুণ ভগবানের মধ্যে আছে, সেটা আমাদের মধ্যেও আছে। তিনি পূর্ন এবং নিত্য আমরা অপূর্ণ এবং অনিত্য।
যখন একটি শিশুর জন্ম হয়। অপরিচিত হলেও তাঁকে আমরা আদর করে কোলে তুলে নেই। কিন্তু কোনো যুবক বা যুবতীর ক্ষেত্রে তেমন হয় না। ইশ্বরের ঐশ্বর্য্য ওই শিশুর মধ্যে দিয়ে আমাদের আকর্ষণ করে বলেই এমন হয়। ওই শিশুর মধ্যে বীর্য , যশঃ, শ্রী, ক্ষুধা পেলে শিশু কান্না করে, মাতৃ স্তন্য কিভাবে চুষতে হয়, সেটা কেউ শিখিয়ে দেয় না। কিভাবে সে জানলো? এটাও ইশ্বরের জ্ঞানের একটি সামান্য প্রকাশ। শিশুর মধ্যে প্রকাশিত। তেমনি বৈরাগ্য, শ্রী, জ্ঞান সব কিছুই কম বেশী আমাদের মধ্যে থাকে। আমরা জ্ঞানবান, ধনবান, বীর্য্যবান হতে পারি।
আবার ‘ভগ’ কথার আরেক অর্থ হলো যোনী। যেভাবে ধন + বান = ধনবান হয়, সেই ভাবেই ভগ + বান = ভগবান, এবং ভগ+বতী =ভগবতী। এই ক্ষেত্রে যোনী অর্থে জনন অঙ্গ নয়। যেখান থেকে জগত সৃষ্টি হয়েছে সেটা ব্রহ্ম যোনী। ভগবত গীতার চতুর্দশ অধ্যায়ে 3 ও 4 নম্বর শ্লোকে শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন:
মম যোনির্মহদ্ব্রহ্ম তস্মিন্ গর্ভং দধাম্যহম্।সম্ভবঃ সর্বভূতানাং ততো ভবতি ভারত।।৩।।সর্বযোনিষু কৌন্তেয় মূর্তয়ঃ সম্ভবন্তি যাঃ।তাসাং ব্রহ্ম মহদযোনিরহং বীজপ্রদঃ পিতা।।৪।।
অর্থাৎ —হে ভারত পুত্র! প্রকৃতি সংজ্ঞক ব্রহ্ম আমার যোনিস্বরূপ এবং সেই ব্রহ্মে আমি গর্ভাধান করি, যার ফলে সমস্ত জীবের জন্ম হয়। হে কৌন্তেয়! সকল যোনিতে যে সমস্ত মূর্তি(রূপ) প্রকাশিত হয়, ব্রহ্মরূপী যোনিই তাদের জননী-স্বরূপা এবং আমি তাদের বীজ প্রদানকারী পিতা।
0 Comments: